"নিঃস্বার্থ ভালোবাসা"
ডাইরি থেকে সাদা কাগজটা ছিঁড়ে কলম দিয়ে বেশ বড় বড় অক্ষরে সুন্দর করে "আমার মৃ*ত্যু*র জন্য কেউ দায়ি নয়" বি*পদে ফেললো অদ্রি। পেলটা ভাজ করে টেবিলের উপরে রাখা গ্লাসের সীমানা দিলো সে।
হ্যাঁ... মোটামুটি শেষ, নতুন ব্লে*ডটা খোলা পালা।
নতুন চক্ককে ব্লে*ডটা দেখছে আর ভাবছে পরই হাতের শিরা কাটবে সে এ ব্লে*ড দিয়ে। কি মনে করে ব্লে*ডটা টেবিলের উপর তথ্য দিয়ে শেষ পর্যন্ত মত জোছনা দেখতে অদ্রি। আনমনে ফিরে পুরোনো স্মৃতিতে।
নিঃস্বার্থ মানুষ
অরণ্যের সাথে প্রথম দেখা হয়েছিল ভার্সি শৃঙ্খল। প্রথম প্রথম অরণ্যকে ভালো না শোনাও অরণ্য ছিল নাছোড়বান্দা ছেলে। সে তার পাগলামো দিয়ে ঠিকই অদ্রির মন জয় করে নিয়ে। তারপর শুরু এ জুটির সম্পর্ক। ভার্সি সেট এ জুটির সুনামের কোনো কমতি না। দুষ্টু সংবাদ খুনসুটি আর কিছুটা ঝগড়া নিয়েই চলতে তাদের দিনগুলো।
দেখতে দেখতে দেখতে বসন্ত প্ল্যাগ অপর হাত ধরে সেটাই কাতর তারা নিজেরাও না। কিন্তু অরণ্যকে ভালো লাগার কথা জানাতে পারেন। যে অরণ্য অদ্রির সাথে ফোনে কথা বলার জন্য থাকো, আজকাল তাকে কল অপেক্ষায় ওয়েটিংয়ে পায় অদ্রি। প্রথম প্রথম টাওয়ারসলি না নিমিষেই খুব একটা সময় অদ্রি কষ্ট পেতো অরণ্যের ব্যবহার। অরণ্য বলতে অনেক যোগাযোগই বন্ধ করে দেয় অদ্রির সাথে। আর এ যোগাযোগ স্থায়ী হয় আজকে...
নিঃস্বার্থ প্রেম
-অরণ্য তুমি এমন হওয়া কেন?
-এমন হয়ে গেছি? কি বলতে চাও করে বলো অদ্রি।
-তুমি আমাকে অবহেলা করছো। ফোন দিয়ে ওয়েটিংয়ে থাকে। তুমি আগে এমন ছিল না অরণ্য!
-শুনো অদ্রি স্বাভাবিক স্বাভাবিক যে একই ধরনের আচরণ হবে তা তো নয়। সময় আবদার দেয়। সো, এখানে অপরাধ কি?
-হ্যাঁ সত্যি তো এখানে কোন অপরাধী নেই!
- আমি প্রকৃতপক্ষে আর সহ্য করতে পারি। আই থিংক আমাদের রিলেশন কন্টিনিউ করা ঠিক না। সো...
-প্লিজ অরণ্য আমি অনেক ভালোবাসি। তুমি যেমন আছো ছোটোই থাকো তারপরও প্লিজ ছেড়ে যাও না প্লিজ...।
সত্যিকারের ভালোবাসা
-লিসেন অদ্রি, আমার ব্যবহার রিলেশন কন্টিনিউ করা পসিবল না! কারণ আমি আর ভালোবাসি না। আই এম এক্সট্রেমলি স্যারি।
-মানে? কি বলছো আমাকে? মাথা ঠিক আছে তোমার?
-হ্যাঁ... কারণ দেখা তোমার সাথে আমার যায় না। শুধু আমাদের ফ্যামিলি আর অনুসন্ধান.....
- থামো অরণ্য... রিলেশন করার আগে আসেনি আমাকে?
-দেখো আমি মানছি আমার ভুল ছিল বাট আমি আর এই পেইন নিতে পারতেছিনা।
-প্লিজ না প্লিজ.... আমি এমন বোকা না তোমায় ছাড়া অরণ্য প্লিজ!!
অনেক পছন্দের পরও অরণ্য ফিরে আসে। অদ্রি কিন্তু লাভ!
সোজা পথে নিজের রুমে। মা অবশ্য কিছুক্ষণ ডাকলেও সে পাত্তা দেয়নি।
সিদ্ধান্ত, আজই উচ্চ মায়াবে। যে ভালোবাসার মত আর কেউ নেই। উদ্যম মেঘে ডাকে কল্পনা জগৎ থেকে বের করা অদ্রি। কি মনে করে ভাবলো শেষ করার মত মা-বাবার সাথে দেখা করা উচিত। সেই পথ খুলতে মাতো,
-দেখ তো মা ড্রেসটা তোর পছন্দ হয়েছে?
-হুম খুব হয়েছে মা।
-সেদিনে বাজার দেখেছিলি ড্রেসটা বারবার।
-তুমিও না মা কি যে করো!
-নিজের কাছে খুব খারাপ রে মা। আজ সামর্থ্য সমর্থন নেই বলে জনশক্তি দিতে পারি না।
এমন সময় অদ্রির বাবা বাস্তব সত্য। হাতে মনে হচ্ছে মাছের ব্যাগ হবে।
ব্যাগটা অদ্রির আমার হাতে দিলেন,
-মেয়েটা ঠিক ধরে বলে চিংড়ী মাছ খাবে। তাই ভাবলাম আজ বেতন ক'টা চিংড়ি নিয়ে মেয়ের জন্য। মজা করে রান্না করো তুমি অদ্রির মা যেমনটা অদ্রি পছন্দ করে।
অদ্রি আমাকে দেখছে আর পানি ফেলছে। কিছু না বলে নিজের কাছে এসে বালিশ খুব চেপে কান্না কর। ঠিক এমন সময় ছোট ভাইটা এসে কাটালো,
-আপু কি হয়েছে তোর? শরীর খারাপ?
-না রে ভাই এমনি। কিছু হয়েছে আমার।
-কি হয়েছে বলনা রে আপু! আমি তোর ব্যাগ থেকে টাকা নিয়ে পাওয়ার সেজন্য? ভাল আমি কাল টিফিন না টাকাগুলো তোকে দিবো আপু। প্ল্যাট আর কনিস না বিশ্বাস কর আর এমন না।
অদ্রি আর সহ্য করতে পারি না! হাউমাউ করে কেঁদে উঠলো। কান্নার শব্দ ব্যবহারকারী বাবা-মা ছুটে এলেন অদ্রির রুমে। অদ্রি করে তার মাকে ধরলো।
আমার বাবা-মা পেলাম না।
গ্লাসের নিচ থেকে পেলটা ছিড়ে টুকরো টুকরো জানালা দিয়ে জানালো।
জোছনা আলোয় অন্ধকার ঘরটা আলোকিত হয়ে উঠেছে, অদ্ভুত সুন্দর সাংস্কৃতিক অনুশীলন।
জীবন অনেক সুন্দর মনে হচ্ছে অদ্রির। জোড়ার টুকরোর পুরোনো টুকরো টুকরো হওয়া, গভীর অধ্যায় অদ্রির জীবনের সঙ্গে নতুন করে।
No comments